AI- Powered Digital Media & Learning Platform
AI- Powered Digital Media & Learning Platform

ব্লগিং কিভাবে শুরু করবেন? লেখালেখি করে টাকা আয় ২০২৪

লেখালেখি আপনার শখের জায়গা থেকে হতে পারে ইনকামের সোর্স। আমাদের আশেপাশের অনেক কে বলতে দেখি সে ব্লগার। ২০২৩ সালে এসে, ব্লগিং করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত? বা আপনি যদি লিখালিখি করতে চান, তাহলে কিভাবে শুরু করবেন?

আজকের আমরা জানবো কিভাবে একটা পার্সোনাল ব্লগ শুরু করা যায়। ব্লগ ছাড়াও লেখালেখি করে কিভাবে টাকা আয় করা যায় সেটাও আমরা জানবো।

আরও পড়ুন: ফেসবুক থেকে আয় ২০২৪: কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা যায়?

ব্লগ কি?

এই মুহূর্তে আপনি বঙ্গ উইকিতেএকটি কন্টেন্ট পড়ছেন। এখানে বঙ্গ উইকি হচ্ছে একটি ব্লগ। ব্লগ মানে যেখানে বিভিন্ন বিষয়ের উপর কনটেন্ট থাকে। আর কনটেন্ট গুলো সাধারণত হয়ে থাকে টেক্সট ফরম্যাটে।

আপনার কনটেন্ট যদি টেক্সট না হয়ে ভিডিও হয় তাহলে সেটার নাম কিন্তু ব্লগ না। সেটা ভলগ (Vlog)। এখন এক কথায় বলতে গেলে, ব্লগ হচ্ছে এক ধরনের ওয়েবসাইট।

বাংলাদেশে ব্লগিং বিষয়টা জনপ্রিয় হয় ইন্টারনেট এক্সেস এর পর থেকেই। মানুষজন তাদের মনের ভাব, মতামত লেখালেখির মাধ্যমে প্রকাশ করতে শুরু করে।

ব্লগার কারা?

এই কনটেন্ট লেখার শুরুতেই আমরা জেনেছি ব্লগারের কথা। যারা মূলত ব্লগিং করে তাদেরকে বলা হয় ব্লগার। অর্থাৎ আপনি যদি ফেসবুকে কোন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন তাহলে কিন্তু আপনি ব্লগার!

ব্লগার আর কন্টেন্ট রাইটার কি এক?

না, ব্লগার আর কনটেন্ট রাইটার একইরকম মনে হলেও একটু আলাদা কনসেপ্ট। ব্লগার হচ্ছে যারা কোন অনলাইন প্লাটফর্মে লেখালেখি করে তারা। অন্যদিকে কনটেন্ট রাইটারের পরিধি একটু বড়।

যারা লিখবে মূলত তারাই কনটেন্ট রাইটার। একজন কন্টেন্ট রাইটার চাইলে অনলাইন ব্লগে লিখতে পারেন, মার্কেটিং এর জন্য লিখতে পারেন, নাটক বা সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখতে পারেন। আর একজন ব্লগার শুধু ব্লগেই লেখালেখি করেন।

অর্থাৎ সকল কন্টেন্ট রাইটারই ব্লগার, কিন্তু সকল ব্লগার কন্টেন্ট রাইটার নয়।

ব্লগিং শুরু করার আগে

এতক্ষণ অনেক কথা হয়েছে ব্লগিংয়ের বেসিক কিছু বিষয় নিয়ে। এখন মূল আলোচনায় আসা যাক। ব্লগিং শুরু করার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে:

১. নিশ বা টপিক নির্বাচন

লেখালেখি শুরু করার আগেই প্রথমেই উচিত টপিক সিলেকশন করা। টপিক ধরে লেখালেখি শুরু করলে ব্লগে একটা ধারাবাহিকতা থাকে। ভিজিটর ব্লগে ঢুকেই বুঝতে পারে সে কোন বিষয়ের কন্টেন্ট পড়তে যাচ্ছে। তবে এমন না যে একটি নিশ বা টপিক ধরেই আপনাকে ব্লগিং করতে হবে।

আপনি চাইলে একাধিক নিশ (Multi Niche) নিয়েও কাজ করতে পারেন। যেমন বঙ্গই উইকি একটি মাল্টিনিশ ব্লগ। তবে যারা নতুন ব্লগিং শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য পরামর্শ থাকবে একটি নিশ নিয়ে কাজ করার।

২. যা লিখবো সেটা সম্পর্কে আমি কতটুকু জানি?

নিশ সিলেকশন করলেন, কিন্তু সে বিষয়ে আপনার কোন জ্ঞান নেই! তাহলে কিন্তু আপনি কনটেন্ট লিখতে পারবেন না। যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে এবং পর্যাপ্ত জ্ঞান আছে সে বিষয়ে লেখালেখি শুরু করা উচিত।

৩. যে বিষয়ে লিখবো সেরকম কনটেন্ট কতগুলো লিখতে পারবো?

ধরুন আপনি এমন একটা টপিক সিলেক্ট করলেন। সেটা হচ্ছে সিজনাল টপিক, সারা বছর সেই টপিক নিয়ে কথাবার্তা খুব একটা হয় না। তাহলে কিন্তু আপনি ব্লগিং করতে পারবেন না। একটা বিষয়ে আপনি যখন কমপক্ষে ৫০+ কনটেন্ট লিখতে পারবেন সেটাই নির্বাচন করুন।

যে বিষয়ের উপর আপনি দুই একটা কনটেন্ট লেখার পর আর কনটেন্ট লিখতে পারবেন না। সে টপিকে ব্লগিং না করাই উত্তম। কারণ ব্লগিং ধারাবাহিকতার সাথে করতে হবে।

এছাড়া টপিক নির্ধারণের আগে, সার্চ ভ্যালু চেক করতে হবে। সঠিকভাবে কীওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। যে বিষয়ের উপর কনটেন্ট লিখবেন সে বিষয়ে নিয়ে ভিজিটররা কিছু জানতে চায় কিনা।

কিভাবে ব্লগিং শুরু করবো?

ব্লগিং করতে চাইলে আপনি মূলত দুইটি উপায়ে শুরু করতে পারেন। প্রথমটি হচ্ছে অন্যের ব্লগে লিখা, দ্বিতীয়টি নিজের একটি ব্লগ তৈরি করা। প্রথমে আমরা অন্যের ব্লগে লেখালেখি নিয়ে একটু কথা বলবো, তারপর নিজের ব্লগ তৈরি করা নিয়ে বিস্তারিত জানবো —

১. অন্যের ব্লগে লেখা

বাংলাদেশের ব্লগিং মূলত জনপ্রিয় হয়েছে অন্যের ব্লগে লেখালেখি করার মাধ্যমে। শুরুর দিকে সামুব্লগ খুব বেশি জনপ্রিয় ছিল। যদিও সামুব্লগ অনেকটা ব্লগারদের কমিউনিটির মতো।

অন্যের ব্লগে বা পাবলিক প্ল্যাটফর্মে লিখে প্রকাশ করা সহজ। বাংলাদেশী এবং গ্লোবালি অনেক ব্লগিং প্লাটফর্ম আছে যেখানে আপনি লেখালেখি করতে পারেন। আপনি চাইলে কিন্তু বঙ্গ উইকিতে লিখতে পারেন! এজন্য বঙ্গ উইকির অফিশিয়াল মেইলে আপনার যেকোন লেখার ডেমো পাঠাতে হবে।

২. নিজের ব্লগ তৈরি করা

মেইনলি ব্লগিং বলতে নিজের ব্লগ তৈরি করে সেখানে লেখালেখি করাকেই বোঝায়। কারণ অন্যের ব্লগে লেখালেখি করার একটা নীতিমালা থাকবে। কিন্তু আপনার নিজের ব্লগে আপনি স্বাধীন ভাবে লিখতে পারবেন।

নিচে আমরা জানবো কিভাবে নিজের একটি ব্লগ বানাতে হয় —

কিভাবে নিজের ব্লগ বানাতে হয়?

ব্লগ যেহেতু মূলত এক ধরনের ওয়েবসাইট। তাই ব্লগ বানানোর আগে কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে বেসিক জ্ঞান থাকলে সহজ হবে।

ডোমেইন নির্বাচন

ব্লগ তৈরীর আগে প্রথম কাজটি হচ্ছে একটি নাম দেওয়া। যাকে বলা হচ্ছে ডোমেইন। যেমন আমাদের ব্লগের নাম হচ্ছে বঙ্গ উইকি। আর আমাদের ডোমেইন হচ্ছে bongowiki.com

পছন্দমত নাম নির্বাচন করার পর, দেখতে হবে এর ডোমেইনটি খালি আছে কিনা। ইতোমধ্যে কেউ ডোমেইনটি নিয়ে রাখলে আপনি সেটি আর নিতে পারবেন না।

আর ডোমেইন নির্বাচনের ক্ষেত্রে নামটি ছোট রাখার চেষ্টা করবেন। চেষ্টা করবেন সেটার বানান যেন সহজ হয়। এবং ডোমেনটি ভিজিটর যেন সহজেই মনে রাখতে পারে। আমাদের bongowiki শেষে .com অংশটি হচ্ছে ডোমেইন এক্সটেনশন।

এরকম আরও কয়েকটি এক্সটেনশন হলো net, info, .org, live, ai, blog, shop, xyz ইত্যাদি। ব্লগের ক্ষেত্রে ডোমেইন এক্সটেনশন খুব একটা বেশি ম্যাটার করে না। তবে সব থেকে বহুল ব্যবহৃত ডোমেইন এক্সটেনশন হচ্ছে .com। তাই সাজেশন থাকবে ডট কম ডোমেইন নেয়ার জন্য।

এখন কথা হচ্ছে ডোমেইন আপনি কোথা থেকে কিনবেন? ডোমেইন কেনার জন্য অনেক নামকরা ওয়েবসাইট রয়েছে। আপনি চাইলে বড় বড় ওয়েবসাইট থেকে ডোমেইন নিতে পারেন। যেমন: name.com, hostinger, domain.com, namecheap

এছাড়া বাংলাদেশি অনেক বিশ্বস্ত ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার রয়েছে। আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকেও ডোমেইন নিতে পারেন। আমাদের দেশি ভাইদের কাছে ডোমেইন নিলে আপনি বিকাশ, নগদ বা রকেটে পেমেন্ট করতে পারবেন।

আর বিভিন্ন এক্সটেনশন অনুযায়ী ডোমেইনের দাম সাধারণত ২০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। যা প্রতিবছর রিনিউ করতে হবে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সেরা ৫টি হোস্টিং কোম্পানি

হোস্টিং নির্বাচন

ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে ডোমেইনের পর যে বিষয়টি আসে সেটি হচ্ছে হোস্টিং। ব্লগ ওয়েবসাইটের জন্য খুব দামী হোস্টিংয়ের দরকার পড়ে না। তবে একটু ফাস্ট সার্ভার থেকে হোস্টিং নেওয়ার পরামর্শ থাকবে।

আপনি চাইলে বাইরের ওয়েবসাইট বা দেশীয় ওয়েবসাইট থেকে হোস্টিং নিতে পারেন। হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রেও ডোমেইনের মতো প্রতি বছর রিনিউ করতে হবে। হোস্টিং ভেদে খরচ হতে পারে বছরে ১০০০/২০০০ টাকা।

এছাড়া ডোমেইন হোস্টিং ছাড়াও ব্লগিং শুরু করতে পারেন। গুগলের ব্লগার প্ল্যাটফর্ম এজন্য ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে ডোমেইন যোগ করেও ব্লগস্পটে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।

লিখালিখি শুরু

সহজে বুঝাতে কনটেন্টের শুরুতে বলেছি ব্লগিং মানেই লিখালিখি। একটা ব্লগ সাইটের প্রাণ হলো তার কনটেন্ট। ব্লগে নিয়মিত কনটেন্ট দিতে হবে। চেষ্টা করবেন সপ্তাহে অত্যন্ত ৩টি কনটেন্ট দিতে। সেই সাথে কনটেন্ট হতে হবে ইউজার ফ্রেন্ডলী।

এআই এর যুগে কনটেন্ট লিখা আরো সহজ। সহজেই ChatGTP এর মতো বট দিয়ে কনটেন্ট লিখতে পারবেন। তবে কনটেন্ট নিজের মতো অপটিমাইজ করতে হবে। আমি পরামর্শ দিবো, এআই দিয়ে কনটেন্ট না লিখে শুধুমাত্র আইডিয়া জেনারেট করা।

সবথেকে বড় কথা, সার্চ ইঞ্জিনের গাইডলাইন মেনে কনটেন্ট লিখতে হবে। কনটেন্ট লিখার আগে কিওয়ার্ড এনালাইসিস করতে হবে। সঠিকভাবে ছবি যুক্ত করতে হবে।

দেখে নিন: এসইও ফ্রেন্ডলী আর্টিকেল লেখার নিয়ম ২০২৪

ব্লগিং করে আয় করার উপায়

অনলাইন ইনকাম নিয়ে যেহেতু জ্ঞান রাখেন তাহলে হয়তো প্যাসিভ ইনকাম শব্দটা অবশ্যই শুনেছেন। প্যাসিভ ইনকাম হচ্ছে সবসময় কাজে একটিভ না থেকেও টাকা আয় করা। ব্লগিং হচ্ছে প্যাসিভ ইনকামের সর্বোত্তম উপায়। ব্লগে আপনার সারাদিন পরে থাকতে হবে না, কনটেন্ট দিবেন তারপর আপনি যাইই করেন না কেনো আপনার কিন্তু আয় হতেই থাকবে।

ব্লগ থেকে কয়েকটি উপায়ে আয় করা যায়। সবথেকে জনপ্রিয় হলো বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সবথেকে বেশি ইউজ করা হয় গুগল এডসেন্স। নির্দিষ্ট পরিমাণ কনটেন্ট লিখার পর গুগল এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয়। গুগল আপনার ব্লগ রিভিউ করে এডসেন্স অনুমোদন দেয়।

এক্ষেত্রে ব্লগের কনটেন্ট ইউনিক ও কপিমুক্ত হতে হয়। সাধারণত কোয়ালিটি সম্পন্ন ২০/২৫টি কনটেন্ট দিয়েই এডসেন্স পাওয়া যায়। এডসেন্স ছাড়াও অন্যান্য কিছু এডস প্ল্যাটফর্ম আছে। বিকল্প হিসেবে সেগুলো ইউজ করতে পারেন। বিকল্পের মধ্যে Ezoic অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

বিজ্ঞাপন দেখানো ছাড়াও এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ব্লগ থেকে আয় করা যায়। এক্ষেত্রে ব্লগে কোনো প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয়। ভিজিটর সেই লিংক থেকে প্রোডাক্টটি নিলে সেটার শতকরা কমিশন আপনি পাবেন। বর্তমানে বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম হলো Amazon, bluehost, clickbank, ebay.

আরও দেখুন – ওয়েবসাইট থেকে আয় – গুগল এডসেন্সের ১০টি সেরা বিকল্প

লেখালেখি করে আয় ২০২৪

শখের লিখালিখি হতে পারে আপনার আয়ের উৎস। ভালো কনটেন্ট লিখতে পারলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারেন। সাধারণত মার্কেটপ্লেসে ভালো কনটেন্ট রাইটারের চাহিদা অনেক বেশি। ইংরেজিতে কনটেন্ট লিখতে পারলে এক্ষেত্রে ভালো আয় করা সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সিং ছাড়াও লিখালিখি স্কিল নিয়ে ফুলটাইম জব করতে পারেন। স্ক্রিপ্ট রাইটিং, কপি রাইটিং, সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট রাইটিং নিয়ে কাজ করা হয় এসব জবে। এই জবগুলো মূলত বিভিন্ন এজেন্সির আন্ডারে হয়ে থাকে।

সবশেষে

লিখালিখি একটি দারুন স্কিল। একাডেমিক পারফরম্যান্স থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রে এই স্কিল বড় একটা ভূমিকা রাখবে। আমরা জেনেছি কিভাবে ব্লগিং করতে হবে, কোথা থেকে শুরু করতে হবে। লিখালিখি করে টাকা আয়ের উপায় নিয়েও কথা বলেছি। আশা করছি, আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারে এই কনটেন্ট একটু হলেও ভূমিকা রাখবে। হ্যাপি ব্লগিং।

Share this article
Shareable URL
Prev Post

যেভাবে ব্লগার সাইটে স্পিড বাড়াবেন – Blogger Speed Optimization

Next Post

ডোমেইন কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *